নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসনে স্থানীয় আওয়ামীলীগের পছন্দের প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম। তিনি এই আসনে মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে জোর লবিং চালাচ্ছেন। জাফর আলম চকরিয়া-পেকুয়া আসনে তার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে উপজেলা পরিষদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন। ১৯ নভেম্বর তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব জিয়াউদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জাফর আলমের নাম। এই আসনে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত বলে জানান নেতাকর্মীরা। এ কারণে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। ১৯ নভেম্বর পদত্যাগপত্রটি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ে গৃহিত হওয়ার পর তার মনোনয়ন পেতে আর বাধা নেই বলেও দাবী করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
গত কয়েকদিন ধরে চকরিয়া-পেকুয়া আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। এলক্ষে তার অনুসারীরা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রায় ২৫জন প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ, জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য এএইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এড: আমজাদ হোসেন, হাইকোর্টের সহকারী এর্টনী জেনারেল জেসমিন সোলতানা শামসাদ, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ড. মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম সজীব, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র মো.আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খালেদ মোহাম্মদ মিথুন, সদস্য এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জিয়া, সদস্য মিজানুর রহমান, সদস্য উম্মে কুলসুম মিনু, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সরওয়ার আলম, মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুল, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিট,ু সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক, ত্রান ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শফিউল আলম বাহার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এড: ফয়সাল সিদ্দিকী, জেলা যুবলীগ নেতা মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু ও চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি খলিল উল্লাহ চৌধুরী। তারাও মনোনয়ন পেতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাছাড়া এই আসনের জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি মৌলভী মোহাম্মদ ইলিয়াছও মনোনয়ন পেতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। চকরিয়া-পেকুয়া আসনটি ছাড়তে নারাজ আওয়ামীলীগের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টি। এজন্য কৌশলগত কারণে আওয়ামীলীগ প্রার্থীতা ঘোষণা করছে না।
আওয়ামীলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় জাফর আলমে নাম রয়েছে। তবে মহাজোট গঠিত হলে তার প্রার্থীতার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি আসনটিতে জাতীয় পার্টির (জাপা) তেমন ভোট নেই। ২০১৪ সালে ৫জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে জাপা প্রার্থী মোহাম্মদ ইলিয়াছ বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের তার কাছে চরম অবহেলার শিকার হন। একইভাবে বাদ যায়নি জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও।
কক্সাবাজর-১ আসনে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জাফর আলমের মনোনয়নে ঐক্যবদ্ধ। ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে গত ১২ নভেম্বর জমাও দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা জানান, শেষ পর্যন্ত জাফর আলমকে মনোনয়ন দিতে পারে বলে জানান।
জাফর আলম বলেন, আমি স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনুরোধে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমাও দিয়েছি। নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি এই আসনটির জন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ভোটের মাঠে লড়াই করব।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম ঘোষণা করবেন জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
পাঠকের মতামত: